১ বাবা, ২৭ মা, ১৫০ ভাইবোনের বিশাল পরিবারের
কানাডার অন্যতম পরিচিত বহুগামী ব্যক্তি উইনস্টোন ব্ল্যাকমোর। ৬৪ বছরের এই ব্যক্তির...
বিস্তারিতকথাবার্তা অসংলগ্ন। এলাকায় ঘুরছেন এক মহিলা। স্থানীয় কেউ নন, কিন্তু মুখটা ভীষণ চেনা। অবশেষে এলাকার এক জনই চিনলেন ওই মহিলাকে। খবরের কাগজে ছবি বেরিয়েছে তার। আর এই খবরের কাগজের ছবিই মিলিয়ে দিল স্বামী-স্ত্রীকে।
তিনি অনিতা নায়েক। ঝাড়খণ্ডের পূর্ব সিংভূমের মুসাবানি থানা এলাকার বালিয়াগোড়া গ্রামের বাসিন্দা অনিতাকে খুঁজতে সাইকেল নিয়ে হন্যে হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন তার স্বামী মনোহর। অবশেষে রবিবার খড়্গপুরের সাহাচকের বাসিন্দাদের সক্রিয়তা এবং পুলিশের তৎপরতায় বা়ড়ি থেকে বহু দূরে স্ত্রীকে খুঁজে পেলেন স্বামী। মনোহর বললেন, 'গরিব মানুষ। সাইকেল নিয়ে কত দিন ধরে স্ত্রীকে খুঁজছিলাম। এ ভাবে যে ওকে ফিরে পাব ভাবতে পারিনি।' স্ত্রীকে বাড়িতে রেখে ফের রোজগারে বেরোতে হবে মনোহরকে। এ বার স্ত্রীকে সুস্থ করার পালা!
অনিতা মানসিক ভাবে সম্পূর্ণ সুস্থ নন। তার চিকিৎসার খরচ জোগাতে ওডিশায় গিয়েছিলেন মনোহর। কিন্তু ফিরে এসে জানতে পারেন, স্ত্রীর খোঁজ নেই। গত ১১ জানুয়ারি ডুমারিয়ার কুমড়াশোলে বাপের বাড়ি থেকে সেই যে বেরিয়ে গিয়েছিলেন অনিতা, তার পর থেকে আর তার খোঁজ ছিল না। পেশায় দিনমজুর মনোহর মোসাবনি ও ডুমারিয়া থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন। কিন্তু বহুদিন কেটে গেলেও খোঁজ মেলেনি। শেষে কারও উপর ভরসা না করে সাইকেল নিয়ে স্ত্রীকে খুঁজতে বেরিয়ে পড়েন মনোহর। সঙ্গে স্ত্রীয়ের একটা ছবি। গ্রামের পর গ্রাম সাইকেলে চষে ফেললেও অনিতার খোঁজ পাননি মনোহর। সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয় স্ত্রীকে খোঁজার মনোহরের এই মরিয়া প্রয়াস।
খড়্গপুর গ্রামীণ থানার সাহাচকের কাছে অনিতাকে উদ্দেশ্যহীন ভাবে ঘোরাফেরা করতে দেখেন স্থানীয়েরা। খবরের কাগজে প্রকাশিত ছবির সঙ্গে মিল রয়েছে মহিলার, এ কথা বোঝামাত্রই স্থানীয় বাসিন্দারা থানায় খবর দেন। ঘটনাস্থলে পৌঁছায় পুলিশ। মুম্বাই-কলকাতা ৬ নম্বর জাতীয় সড়কের ধার থেকে উদ্ধার করে অনিতাকে পুলিশ থানায় নিয়ে যায়। কিন্তু পুলিশ সূত্রের খবর, মানসিক অসুস্থতার জন্য কিছুই বলতে পারছিলেন না অনিতা। ফলে খড়্গপুর গ্রামীণ থানা ঝাড়খণ্ডের মুসাবানি থানার সঙ্গে যোগাযোগ করে। মুসাবনি থানা মনোহরকে জানায়, তিনি যেন অবিলম্বে খড়্গপুর গ্রামীণ থানায় পৌঁছান।
কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই থানায় হাজির হয়ে যান মনোহর। সেখানেই পুনর্মিলন। স্ত্রীকে দেখে আনন্দে চোখে জল এসে যায় মনোহরের। সত্যি! এ ভাবে যে স্ত্রীকে ফিরে পাবেন তা তো আশা করতে পারেননি তিনি। অনিতাও দারুণ খুশি। থানায় শনাক্তকরণ পর্ব মিটিয়ে সন্ধ্যার পর বাড়ি রওনা দিলেন দম্পতি। সাঙ্গ হল স্ত্রীর খোঁজে স্বামীর সাইকেল সফর। সূত্র: আনন্দ বাজার
মোবাইল থেকে খবর পড়তে অ্যাপস ডাউনলোড করুন