১ বাবা, ২৭ মা, ১৫০ ভাইবোনের বিশাল পরিবারের
কানাডার অন্যতম পরিচিত বহুগামী ব্যক্তি উইনস্টোন ব্ল্যাকমোর। ৬৪ বছরের এই ব্যক্তির...
বিস্তারিতচলনবিলে বোরো চাষের ভরা মৌসুমে ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় বোরো চাষি কৃষকেরা সেচ কাজ নিয়ে বিপাকে পড়ে গেছেন। এদিকে পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় কৃষক তাদের গভীর ও অগভীর নলকূপ থেকে কাঙ্ক্ষিত পানি পাচ্ছেন না।
কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, সিরাজগঞ্জের তাড়াশ, রায়গঞ্জ, উল্লাপাড়া, শাহজাদপুর, পাবনার ফরিদপুর, ভাঙ্গুড়া, চাটমোহর, নাটোরের গুরুদাসপুর, সিংড়া ও নওগাঁর আত্রাই উপজেলার বিস্তীর্ণ ফসলী মাঠে প্রায় আড়াই লাখ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের বোরো ধানের আবাদ করা হয়েছে। যা সেচের ওপর নির্ভরশীল। আর ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তরের গভীরতা চলনবিলের একেক জায়গায় একেক রকম। দক্ষিণ-পশ্চিমে চলনবিলে পানির স্তর ক্রমশ: দ্রুত নিচে নেমে যাচ্ছে। আবার উত্তর ও পূর্ব বিলের ফসলী মাঠে পানির স্তর নিচে নামার পরিমাণ দক্ষিণ-পশ্চিমের চেয়ে কম।
মূলত: আশির দশকে চলনবিলে ব্যাপকভাবে বোরো আবাদ শুরু হয়। গত ৩৫ বছরে চলনবিলের প্রধান খাদ্যশস্য আবাদ বোরো ধান চাষে এ অঞ্চলের কৃষক হাজার হাজার অগভীর ও গভীর সেচযন্ত্র দিয়ে পানি উত্তোলন করে বোরো আবাদ করে আসছে। এছাড়া গম, রসুন, সরিষা, তরমুজ, খিরা, শসা সহ নানা রবিশস্য আবাদে ভূ-গর্ভস্থ পানির ব্যবহার বাড়িয়ে দিয়েছে। ফলে নব্বই দশকের পর চলনবিলের বিভিন্ন স্থানে পানির স্তর ক্রমশ: নিচে নামতে শুরু করে।
ঘরগ্রাম গ্রামের কৃষক তোরাব উদ্দিন জানান, এ বছর তিনি সেচযন্ত্র বসাতে গিয়ে গত বছরের চেয়ে ১৫ ফুট বেশি গভীরতায় পানির পাইপ স্থাপন করেছেন। এদিকে কৃষক রফিকুল ইসরাম জানান, আগের তুলনায় সেচযন্ত্রে পানি কম ওঠায় তাদের জ্বালানী খরচ বেড়েছে। পূর্বে প্রতি মৌসুমে ১ বিঘা জমিতে ১৬-১৯ লিটার জ্বালানী তেল লাগলেও বর্তমানে তা ২৫-৩০ লিটারে গড়িয়েছে। এছাড়া পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় জমিতে সেচ দিতে গিয়ে আগের তুলনায় সময়ও বেশি লাগছে।
পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়া প্রসঙ্গে তাড়াশ উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী মাহমুদুল হক জানান, চলনবিল অঞ্চলে ভু-গর্ভস্থ পানি উত্তোলন বৃদ্ধি পাওয়ায় গ্রীষ্ম মৌসুমে পানির স্তর নিচে নেমে যায়। বর্ষা মৌসুমে পানির স্তর আবারও বৃদ্ধি পেয়ে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে।
খালখুলা গ্রামের কৃষক নান্নু তালুকদার (৪৪) জানান, তাদের আশেপাশের মাঠের বেশির ভাগ শ্যালো মেশিন পানির স্তর সমস্যার কারণে মাটি গর্ত করে শ্যালো মেশিন বসিয়ে পানি সেচ দিচ্ছেন। তিনি আরও জানান, ফাল্গুনের প্রথমে ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তরের সমস্যা চৈত্র-বৈশাখ মাসে আরও বাড়বে।
চলনবিলের প্রবীণ কৃষকেরা বলেন, চলনবিলে বিভিন্ন ফসলের আবাদে ভূ-গর্ভস্থ পানির ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় পানির স্তর ক্রমে ক্রমে নিচে নেমে যাচ্ছে। তারা আরও জানান, চলনবিলের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত প্রায় ১৬টি নদী মৃত প্রায়। অসময়ে শুকিয়ে যাচ্ছে খাল-বিল। ফলে পানির স্তর সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করছে। আর ধাপে ধাপে পানির স্তর নিচে নামায় সচেতন কৃষক শঙ্কিতও বটে।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ সাইফুল ইসলাম, চলনবিলের কিছু কিছু এলাকায় গ্রীষ্ম মৌসুমে পানির স্তর নিচে নেমে যায়। যেমন ডিসেম্বর মাসে চলনবিলের কিছু এলাকায় পানির স্তর ছিল ২৪-২৫ ফুট নিচে। বর্তমানে তা ২৬-২৭ ফুট নিচে নেমে গেছে। আগামী মাসে আরো পানির স্তর নিচে নামবে। তবে, এপ্রিলে বৃষ্টি হলে তা স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরবে।
মোবাইল থেকে খবর পড়তে অ্যাপস ডাউনলোড করুন