১ বাবা, ২৭ মা, ১৫০ ভাইবোনের বিশাল পরিবারের
কানাডার অন্যতম পরিচিত বহুগামী ব্যক্তি উইনস্টোন ব্ল্যাকমোর। ৬৪ বছরের এই ব্যক্তির...
বিস্তারিতএই অর্থ বছরেই দেশের গণ্ডি পেরিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নে রপ্তানি হতে যাচ্ছে মধুপুরের আনারস। সরকারি প্রতিষ্ঠান হটেক্স ফাউন্ডেশন এর মাধ্যমে সম্পূর্ণ অর্গানিক পদ্ধতিতে ফলানো আনারস এই অর্থ বছরেই ইউরোপীয় ইউনিয়নে রপ্তানি করা হবে।
হটেক্স ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে পর্যায় ক্রমে বিশ্বের অন্যান্য দেশের রপ্তানি হবে মধুপুরের আনারস। সম্পূর্ণ অর্গানিক পদ্ধতিতে চাষ করা আনারসে দ্রুত বৃদ্ধির জন্য হরমন এবং পাকানোর জন্য কোন ধরনের রাইপেনার (ইথোফেন) ব্যবহার করা হয় না।
উন্নত বিশ্বে ফল পাকানো জন্য গ্যাসীয় পদ্ধতি অনুমোদিত। আগামী বছর থেকে মধুপুরে উন্নত বিশ্বের মতো গ্যাসীয় পদ্ধতিতে আনারস পাকানোর জন্য সরকারি ভাবে ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, এই বছর আনারসের বাম্পার ফলন হয়েছে। উৎপাদিত আনারসের পরিমাণ প্রায় ২ লক্ষ ৯ হাজার ৫১২ মেট্রিক টন। ফলে টাঙ্গাইল সহ দেশের বিভিন্ন বাজারে আনারসের সরবরাহ রয়েছে প্রচুর। এবার বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক মুক্ত আনারস হওয়ায় কদর বেড়েছে মধুপুরের আনারসের। ফলে লাভের মুখ দেখছে মধুপুরের আনারস চাষিরা।
টাঙ্গাইল জেলার মধুপুর উপজেলা জুড়েই আনারস চাষ হয়। তারমধ্যে অরণখোলা, শোলাকুঁড়ি, আউশনাড়া ইউনিয়নে আনারসের চাষ সবচেয়ে বেশি হয়। এসব এলাকায় চাষ হওয়া আনারসের মধ্যে সুস্বাদু, রসালো ও মিষ্টি হওয়ায় জনপ্রিয় হল জায়ান্টকিউ ও হানিকুইন। হানিকুইন আকারে ছোট এবং স্থানীয়ভাবে জলডুগি নামে পরিচিত। মধুপুরে জায়ান্টকিই জাতের আনারসের চাষই সবচেয়ে বেশি হয়।
কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, এই বছর মধুপুরে ৬৫৭১ হেক্টর জমিতে আনারসের চাষ হয়েছে। এর মধ্যে ৬৩৮০ হেক্টর জমিতে জায়ান্টকিউ এবং ১৯০ হেক্টর জমিতে হানিকুইন জাতের আনারস চাষ হয়েছে। মধুপুরের শালবন লাগোয়া গ্রামগুলোতে শুধুই আনারসের বাগান, এখন এই বাগান গুলোতে এই সময়ে পাকা আনারসের আধিক্য দেখা যায়।
কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, প্রাকৃতিক ভাবে আষাঢ়ের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে শ্রাবণ মাসের শেষ পর্যন্ত আনারস পাকার মৌসুম। তবে মধুপুরে সারা বছরই আনারস বাজারে পাওয়া যায়। মধুপুরের উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাহামুদুল হাসান এ বছর আনারসের চাষ ও রপ্তানি প্রসঙ্গে বলেন, 'এই বছর মধুপুরে আনারসের বাম্পার ফলন হয়েছে।'
সুখবর হচ্ছে, এই অর্থ বছর থেকেই হটেক্স ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে অর্গানিক পদ্ধতিতে উৎপাদিত মধুপুরের এই আনারস ইউরোপীয় ইউনিয়ন সহ বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করা হবে। এই বছর আনারস চাষের প্রথম পর্যায়ে বৃদ্ধির জন্য হরমন এবং পাকানোর ক্ষেত্রে রাইপেনার ( ইথোফেন) ব্যবহার করা হয়নি। তাই মধুপুরের আনারস খাবার ক্ষেত্রে ভয় পাবার কোন কারণ নেই। আমি নিজেও মধুপুরের আনারস খাই।”
আনারসের পুষ্টিগুণ এবং চাষের ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক ব্যবহার প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফুড টেকনোলজি ও পুষ্টিবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান, সহযোগী অধ্যাপক ড. মোঃ আবু জোবায়ের বলেন, 'টাঙ্গাইলের আবহাওয়া বিশেষ করে মধুপুর অঞ্চলের আবহাওয়া আনারস চাষের উপযোগী। আনারসে আছে ভিটামিন সি, যা দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, বিভিন্ন ধরনের মিনারেল যেমন পটাসিয়াম, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, যা দেহের এই সব মিনারেলের অভাব পূরণ করে। এছাড়া আনারসে আছে ফাইবার যেটা আমাদের হজমে সহায়তা করে। তবে অতি মুনাফা লাভের আশায়, কৃষক থেকে শুরু করে বিক্রেতা পর্যন্ত সবাই বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক ব্যবহার করে থাকে আনারসে। যা মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর। এই ব্যাপারে যথাযথ কর্তৃপক্ষের নজর রাখা উচিৎ।'
মধুপুরে আনারসের বাজার রয়েছে, জলছত্র, গারো বাজার, মধুপুর বাজার ও ২৫ মাইল বাজার। সকাল থেকেই এই সব বাজারে আনারস চাষিরা তাদের বাগান থেকে কাটা আনারস বিক্রির জন্য বয়ে নিয়ে আসে।
কথা হয় আনারসের পাইকারি বিক্রেতা মোঃ আব্দুস সালাম ও মোঃ তোরার আলী সাথে। তাদের কথার সাথে কৃষি বিভাগের তথ্যর মিল পাওয়া গেল। তারা বলেন, 'আমরা প্রতিবছর অগ্রিম আনারসের বাগান কিনি। আনারস পাকলে টাঙ্গাইল সহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় আনারস পাঠাই। এই বছর আনারস বৃদ্ধির জন্য কোন ধরনের হরমন ব্যবহার করা হয়নি। আর পাকানোর জন্য কোন ধরনের রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়নি।
টাঙ্গাইল থেকে,
মুক্তার হাসান
মোবাইল থেকে খবর পড়তে অ্যাপস ডাউনলোড করুন