অলিম্পিকে স্বর্ণ জয় এখনো অনেক দূরের স্বপ্ন বাংলাদেশের জন্য। তবে বাংলাদেশেরই মেয়ে মার্গারিটা মামুন রাশিয়ার হয়ে স্বর্ণ জিতে নিয়েছেন। ২০ বছর বয়সী বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এই তরুণী রিদমিক জিমন্যাস্টিকসে অলিম্পিক শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেছেন।
মার্গারিটার জন্ম মস্কোতে। বাবা বাংলাদেশী, মা রাশিয়ান। রাজশাহীর ছেলে আব্দুল্লাহ আল মামুন মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতকোত্তর, মা আনা সাবেক রিদমিক জিমন্যাস্ট। রিদমিক জিমন্যাস্টিকসে তার আসা যে মাকে দেখেই।
বাংলার বাঘিনী খ্যাত এই রাশিয়ান তরুণী রিও অলিম্পিকে অল অ্যারাউন্ড ইভেন্টে ৭৬.৪৮৩ পয়েন্ট পেয়ে স্বর্ণ জিতেছেন।
আশির দশকে আবদুল্লাহ আল মামুন তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নে পড়াশোনা করতে গিয়ে সেখানেই বিয়ে করে থিতু হন। রিদমিক জিমন্যাস্টিকসে এর আগে বিশ্ব রেকর্ডও করেছিলেন মার্গারিটা। হিটে প্রথম হয়েই ফাইনালে উঠেছিলেন তিনি। সেখানে চার ইভেন্ট হুপ, বল, ক্লাব ও রিবনে তার সর্বমোট স্কোর ছিল ৭৪.৩৮৩। ফাইনালে হিটের স্কোরকেও ছাড়িয়ে যান তিনি। স্বর্ণ জয়ের পথে মার্গারিটা পেছনে ফেলেন ফেভারিট ও তিনবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন স্বদেশি ইয়ানা কুদ্রিয়াভৎসেভাকে।
অলিম্পিক পদক এখনো অনেক দূরের স্বপ্ন বাংলাদেশের জন্য। বিশ্বের সবচেয়ে বড় এই ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের অংশ নেওয়া এখনো ‘অভিজ্ঞতা অর্জনের’ মধ্যেই সীমাবদ্ধ। তাই বাংলাদেশি-বংশোদ্ভূত মার্গারিটার অলিম্পিক-সাফল্য গর্বিত করছে বাংলাদেশকেও। গতরাতে মার্গারিটা যখন দৃপ্ত পায়ে এগিয়ে যাচ্ছিলেন স্বর্ণ জয়ের জন্য তখনও ধারাভাষ্যকাররা তাকে বেঙ্গল টাইগার হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। তিনি যে বাংলাদেশেরই সন্তান।
স্বর্ণ পদক জয়ের পর মার্গারিটা মামুন বলেন, “আজ আমার স্বর্ণের পদক জেতাটা খুবই অপ্রত্যাশিত। কারণ আজকের আগে অল অ্যারাউন্ডে ইয়ানা আমাকে হারিয়ে প্রতিবার জিতেছে। তাই আমি আজকে স্বর্ণের পদক জিতবো তা আসলেই ভাবিনি।”
মামুন খুবই আনন্দিত যে তার জয় তার বাংলাদেশেও উদযাপিত হচ্ছে। তিনি বলেন, “আমি এটা জেনে খুব খুশি যে বাংলাদেশের অনেক ভক্ত আমাকে সমর্থন করছে। আমি বাংলায় ১ থেকে ১০ পর্যন্ত গুনতে পারি। যখন ছোটো ছিলাম, আমার বাবা আমাকে বাংলা শেখাতেন; কিন্তু আমি সব ভুলে গেছি।”
রিদমিক জিমন্যাস্টিক্সের সোনার পদকটি বাংলাদেশেরও বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশি বাবা আর রুশ মার ঘরে জন্ম নেওয়া মার্গারিতা।
জুনিয়র পর্যায়ে একবার বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করা মার্গারিটা মামুন বলেন, “আমার দ্বৈত নাগরিকত্ব ছিল, তাই আমি জুনিয়র হিসেবে একটি প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। আমি সবসময় রাশিয়ায় থেকেছি আর অনুশীলন করেছি দেখে এরপর আমি রাশিয়ার প্রতিনিধিত্ব করি।”
ভিডিও দেখতে এখানে ক্লিক করুন...