বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের মূল্য নাটকীয়ভাবে উঠা-নামা করছে। দুই মাসেরও কম সময় আগে তেলের দাম বেড়ে চার বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে উঠেছিল। এর পর থেকেই তা কমতে থাকে।
গতকাল শুক্রবার প্রতি ব্যারেল তেলের দাম নেমে আসে ৫৯ ডলারে, যা গত এক বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন।
দীর্ঘ সময় মন্দার পর গত বছর থেকে চাঙ্গা বিশ্ব জ্বালানি তেলের বাজার। তখন থেকে অল্প অল্প করে বাড়ছে তেলের দাম। এ বিষয়ে উদ্বিগ্ন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তেলের দাম কমানোর উদ্যোগ নিতে সেপ্টেম্বরে তাদের ঘনিষ্ট মিত্র সৌদি আরবকে হুমকি পর্যন্ত দিয়েছেন। কিন্তু তারপরও তরতরিয়ে বেড়েছে তেলের দাম।
অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে প্রতি ব্যারেল তেলের দাম বেড়ে ৮৬ ডলারে উঠে যায়। মূল্য বৃদ্ধির ধারা এতোটাই উর্ধমুখী ছিল যে, বিনিয়োগ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলো মনে করেছিল, চলতি বছরের মধ্যেই মূল্য হয়তো ১০০ ডলার ছাড়িয়ে যাবে। কিন্তু ঠিক এর পরেই শুরু হয় নাটকীয় পতন।
গত দেড় মাসে তেলের দাম প্রায় ৩০ শতাংশ কমে যায়। এর মধ্যে ২০ শতাংশ দাম কমেছে গত তিন সপ্তাহে। আর গতকাল শুক্রবার একদিনে কমেছে প্রায় ৬ শতাংশ দাম।
বিশ্লেষকদের মতে, সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ায় তেলের উৎপাদন ব্যাপকভাবে বেড়েছে। এতে সরবরাহ বেড়েছে বাজারে। অন্যদিকে জ্বালানি তেলের সবচেয়ে বড় ক্রেতা চিনে চাহিদা ব্যাপকহারে কমে গেছে। গত মাসে দেশটির তেল আমদানির পরিমাণ ছিল গত ১৩ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চলমান বাণিজ্য যুদ্ধের কারণে চিনের অর্থনীতি ইতোমধ্যে গতি হারিয়েছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে দেশটিতে তেলের চাহিদা আরও কমে যাবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এছাড়া বিশ্ব অর্থনীতির প্রবৃদ্ধির হারও আগামীতে কমে যেতে পারে। এসব পূর্বাভাস ও উদ্বেগের প্রভাব পড়েছে তেলের বাজারে।
তবে তেলের বাজারকে চাঙ্গা করতে প্রধান উৎপাদক দেশগুলো ইতোমধ্যে নড়েচড়ে বসেছে। সৌদি আরব তেলের উৎপাদন কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আরও কয়েকটি দেশ সে পথ অনুসরণ করবে। তাতে তেলের বাজার আবার হয়তো উর্ধমুখী হয়ে উঠতে পারে। সূত্র: অর্থসূচক